কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন মানুষের মন ও আবেগের মতো স্পর্শকাতর ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, চ্যাটজিপিটি মত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় চালিত চ্যাটবট সাইকোথেরাপির কার্যকর বিকল্প হতে পারে। ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালিত গবেষণায় ৪১৫ দম্পতি অংশগ্রহণ করেন, যেখানে একজন বিষণ্নতায় ভুগছিলেন এবং অন্যজন মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলা করছিলেন। তাদের দেওয়া বক্তব্য বিশ্লেষণ করে, আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া ও সমাধান দেখানো হয়, এবং তারা কোনটি বেশি কার্যকর মনে করেন তা জানা হয়।
গবেষণার ফলাফল বেশ চমকপ্রদ ছিল, যেখানে ৫৬.১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী থেরাপিস্ট এবং ৫১.২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী চ্যাটজিপিটির প্রতিক্রিয়া সঠিক বলে চিহ্নিত করেছেন। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ডে বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারী এআইকে থেরাপিস্টের চেয়ে এগিয়ে রেখেছেন। এর মাধ্যমে একটি নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে, যা ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকে মনোচিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
বিশ্বব্যাপী পেশাদার থেরাপিস্টের সংখ্যা সীমিত এবং অনেকের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে বিশেষজ্ঞরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কার্যকর এবং সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছেন। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জেসিকা জ্যাকসন জানান, থেরাপি সবার জন্য সহজলভ্য হওয়া উচিত, কিন্তু অনেকেই ব্যয় বা জড়তার কারণে থেরাপিস্টের কাছে যান না। এই পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় সাহায্য করতে পারে।
তবে, যদিও গবেষণার ফলাফল ইতিবাচক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা এখনও পুরোপুরি যাচাই করা হয়নি। বিভিন্ন পেশাদার সংস্থা নৈতিকতা বিষয়ক পর্যালোচনা চালাচ্ছে, এবং এটি স্পষ্ট নয় যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানবিক অনুভূতি ও জটিল মানসিক সমস্যা সমাধানে থেরাপিস্টের বিকল্প হতে পারে। গবেষকদের মতে, এ বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর বাকি, তবে তারা মনে করেন যে সঠিক নীতি ও গবেষণা অনুসরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।